রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন
রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) : ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনায় বানিয়াচংয়ের ২ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্ততঃ আরো ৬জন।
নিহতরা হলো-বানিয়াচং ১নং উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নের টাম্বুলিটুলা মহল্লার সোহেল মিয়ার কন্যা আদিবা আক্তার সোহা ( ২), ৭নং বড়ইউড়ি ইউনিয়নের মর্দনমুরত গ্রামের আইয়ুব হোসেনের পুত্র আল আমিন মিয়া (৩৪)।
আহতরা হলো-নিহত আদিবার বাবা সোহেল মিয়া (২৮), তার স্ত্রী নাজমা বেগম (২৫), আদিবার ভাই নাফিস আহমেদ (৬), সোহেল মিয়ার শ্বাশুড়ি রেনু বেগম (৪৫), মর্দনমুরত গ্রামের মনু মিয়া (৪০) ও একই গ্রামের শামিম মিয়া ( ২২)।
আহত সোহেল মিয়ার পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, সোহেল কিছুদিন পূর্বে চট্রগ্রামের কলসি দিঘীর পাড়ের একটি গার্মেন্টসে কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর হিসেবে যোগদান করে। সম্প্রতি কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসে সোহেল। ছুটি শেষ করে তার কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য গতকাল সোমবার শায়েস্তাগঞ্জ রেল জংশন থেকে পরিবার নিয়ে ট্রেনে উঠে। পথিমধ্যে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবায় থানার মন্দবাগ এলাকায় চট্রগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী “তুর্ণা নিশীথার সঙ্গে সিলেট থেকে চট্রগ্রাম ছেড়ে যাওয়া উদয়ন”এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আদিবা আক্তার সোহা ও আল আমিন মিয়া নিহত হয়। আহত হয় ৬ জন।
পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের সদস্যরা নিহতদের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তাদের পরিচয় সনাক্ত করেন। এদের মধ্যে বানিয়াচংয়ের ২ জন নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় আদিবা আক্তার সোহা ও আল আমিন মিয়াকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আল আমিনের চাচাতো ভাই ফুল মিয়া জানান, আল আমিন নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে চট্রগ্রাম যাচ্ছিল। পথে ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যায় সে। আহত হয় তার সাথে থাকা মনু মিয়া ও শামিম মিয়া। আহত সোহেল, নাজমা, রেনু বেগম, মনু মিয়া, শামিম ও নাফিসকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে এদের মধ্যে মুমূর্ষু অবস্থায় সোহেল,নাজমা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আহত রেনু বেগমের চিকিৎসা চলছে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে।
নিহত আদিবা আক্তার সোহা ও আল আমিনের লাশ আনতে তাদের পরিবাবারে লোকজন কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌছেছেন।
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকার নিহত ও আহত’র ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে জানান, নিহত পরিবারের প্রত্যেককে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন তাৎক্ষনিকভাবে ২৫ হাজার টাকা প্রদান করেছেন বলে সেখানকার ইউএনও আমাকে নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নিহত’র পরিবারকে সাহায্য-সহযোগীতা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকার।
প্রসঙ্গত, সোমবার ( ১১ নভেম্বর) ভোর পৌনে ৩টার দিকে কসবা উপজেলার মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্ত:নগর উদয়ন ও তূর্ণা নিশীথার মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ১৬ জন নিহত ও আহত হয় প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী।